About and History of Electrical and Electronics Engineering (Bangla)

 ইইই (EEE)

ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং কে সংক্ষেপে ইইই বলা হয়।

ডেফিনেশন বা সঙ্গাঃ

এখানে ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স দুইটি বিষয় বা বিজ্ঞান রয়েছে। এদের আলাদা ভাবে সঙ্গায়িত করা যায়। যেমনঃ ১। ইলেকট্রিক্যাল এবং ২। ইলেকট্রনিক্স

ইলেকট্রিক্যালঃ

যে কলা বা কৌশলে ইলেকট্রিসিটি প্রবাহের উৎস, সরবারহ এবং বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল বর্তনী নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে তাকে, ইলেকট্রিক্যাল বলে।

ইলেকট্রনিক্সঃ

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যেই শাখায় ভ্যাকুয়াম, গ্যাস বা সেমিকন্ডাক্টরের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহের ফলে সৃষ্ট প্রবাহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় তাকে, ইলেকট্রনিক্স বলে।

 এখন আমাদের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঙ্গিনিয়ারিং বুজতে হলে আগে আমাদের  বুজতে হবে ইলেকট্রিসিটি কি? ইলেকট্রিসিটি হলো কোনো পরিবাহী বা ধাতব পদার্থের ভিতর বা মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহের হার। অতএব, যে কলা বা বিজ্ঞানে ইলেকট্রিসিটি বা ইলেকট্রনের প্রবাহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় সেই কলা বা বিজ্ঞান কেই ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বলে।

ইতিহাস

বর্তমান বিশ্বে আমরা বিদ্যুৎ ছাড়া কোনো কিছুই চিন্তা করতে পারি না। আমাদের জিবনের প্রতিটি কাজে বিদ্যুতের ব্যাপক ব্যাবহার রয়েছে।

বিদ্যুৎ এক প্রকার শক্তি, যা এক শক্তি হতে অন্য শক্তিতে রূপান্তর করা যায়। বিদ্যুৎকে চোখে দেখা যায় না বলে অদৃশ্য শক্তি হিসেবে ধরা হয়।

আর এই বিদ্যুৎ শক্তি কোনো একজন ব্যক্তির দ্বারা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এর পিছনে অনেক মহান মহান বিজ্ঞানীদের অবধান অপরিসীম।

বিদ্যুতের উৎপত্তি গ্রীক শব্দ ‘Electron’ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। ইলেকট্রন শব্দের অর্থ, সোলেমানী পাথর বা এম্বার।

Thales


 ৬০০ সালে গ্রীক দার্শনিক মি. থেলস লক্ষ্য করেন যে, এম্বারকে রেশমি কাপড় দ্বারা ঘর্ষণ করলে এর মধ্যে একটি অদৃশ্য শক্তির উদ্ভব হয় এবং এম্বার ছোট ছোট কাগজের টুকরোগুলোকে আকর্ষণ করে। আর এই অদৃশ্য শক্তিই হলো ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ।

William Gilbert

 তারপর ১৬০০ শতাব্দিতে উইলিয়াম গিলবার্ট আবিষ্কার করেন যে শুধুমাত্র   এম্বারকে রেশমি কাপড় দ্বারা ঘর্ষণ করলেই এর মধ্যে একটি অদৃশ্য   শক্তির উদ্ভব হয় না, বরং দুটি বস্তুর পরষ্পর ঘর্ষণের ফলে তাদের মধ্যে   বিদ্যুৎ শক্তির সৃষ্টি হয়।

 

Thomas Browne

কয়েক বছর পর থমাস ব্রাউনি, তারপর ১৭০০ এবং ১৮০০ শতাব্দি এর শেষের দিক দিয়ে অটো ভোন গেরিক, রবার্ট বয়েল, স্টিফেন গ্রে এবং সি এফ ডি ক্রিস্টার্নি ডু ফে দ্বারা বিদ্যুৎ অনুসন্ধানের কাজ পরিচালিত হয়েছিলো। 

Otto Von Guericke

পরবর্তি কালে বেঞ্জামিন ফ্রেঙ্কলিন তার বহু অর্থ সম্পদ বিক্রি করে বিদ্যুতের       উপর গবেষণা চালিয়ে যান। তার ধারণা ছিলো বিদ্যুতের পজিটিভ   এবং নেগেটিভ  উপাদান আছে, আর এই পজেটিভ এবং নেগেটিভ উপাদানের   মাধ্যমেই বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।

তিনি বিশ্বাস করতেন বজ্রপাত হলো বিদ্যুৎ   প্রবাহের একটি রুপ, এবং তা প্রমানিত 

Robert Boyle

করতে ১৭৫২ সালের জুন মাসে বজ্রপাতের সময় তিনি একটি ঘুরি উড়িয়ে তা পরিক্ষা করেন এবং ব্জ্রপাত আকর্ষণ করানোর জন্য ঘুরির সুতার সাথে একটি চাবি আটকে দেন। 

Stephan Gray

  বজ্রপাতের একতি ছোট কণার স্পর্শে তিনি মাটিতে পরে যান, সৌভাগ্যবসত      তার কোনো ক্ষতি হয় নি এবং তিনি তার ধারণাটিকে সত্য প্রমানিত করতে          সক্ষম হন।

 

ফ্রেঙ্কলিনের কাজের এই সুত্র ধরেই অন্যান্য বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ সম্পর্কে আরো ধারণা

Benjamin Franklin
Luigi Galleani

C F de Cisternay du Fay

লাভ করেন। 

তাদের মধ্যে ১৭৯১ সালে জীব বিজ্ঞানী লুইজি গেলুয়ানি প্রমাণ করেন জীব দেহেও বিদ্যুতের অস্তিত্ত রয়েছে।

 এরপর ১৮০০ সালে ইতালির রসায়নবীদ আলেসসান্ড্রো ভোল্টা সালফিউরিক এসিডের দ্রবণে তামা ও দস্তার পর্যায়ক্রমিক পাতের সাহায্যে প্রথম বৈদ্যুতিক ব্যাটারি ভোল্টাইক পাই উদভাবন করেন। 

যা পূর্বে ব্যবহ্রৃত ইলেকট্রোস্টেটিক মেশিনগুলোর তুলনায় বিদ্যুৎ শক্তির আরো নির্ভরযোগ্য উৎস সরবারাহ করেছিলো।

 ১৮২০ সালে হেনস ক্রিস্টিয়ান এর বিদ্যুৎ ও তড়িত চৌম্বকত্বের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের ব্যখ্যা এবং এম্পেয়্যারের সন্তোলন সূত্র প্রকাশের ফলে, ১৮৩১ সালে মাইকেল ফ্যারাড ইলেকট্রনিক ডাইনামো আবিষ্কার করেন। 

যার চলমান এবং বাস্তব উপায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের সমস্যা সমাধান করেছিলো।

 

Alessandro Volta

   এছাড়াও ১৮২৭ সালে জর্জ ওহম গাণিতিক ভাবে বৈদ্যুতিক বর্তনী বিশ্লেষণ                   করেছিলেন,
 এবং জেমস ক্লার্ক মেক্সোয়েল ১৮৬৮ সালে বিদ্যুৎ, চৌম্বকীয় ক্ষেত্র         এবং আলোর পারস্পারিক যোগসূত্রের ব্যখ্যা করেন।


Hans Christian
   মাইকেল ফ্যারাড তার ইলেকট্রনিক ডাইনামোইয় একটি অস্রক্ষাকৃতির চৌম্বক           ব্যবহার করায় সেই চোইম্বকের দুই মেরুর মাঝখানে স্থাপিত দস্তার চাকতির ঘূর্ণের       ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছিলো।

   এর পর থেকেই বিদ্যুৎকে বিভিন্ন প্রযুক্তির কাজে ব্যাবহার শুরু হয়ে যায়।

   এবং বিদ্যুতকে বানিজ্যিক করনের উদ্দেশ্যে বড় বড় জেনারেটর তৈরি করা               শুরু হয়।

Michael Faraday
Georg Ohm

   যার ফলে বৈদ্যুতিক বাল্ব উদ্ভাবক থমাস এডিশন এবং জসেফ         সুয়ান এরা দুজনি ১৮৭৯ সালে বৈদ্যুতিক বাল্ব উদ্ভাবন করেন।

   শুরুর দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলি শুধুমাত্র ডিসি কারেন্ট        উৎপাদন সম্ভব হতো।

James Clerk Maxwell
বিশ্বের প্রথম কয়েকটি বানিজ্যিক বিদ্যুৎ উতপাদন কেন্দ্রগুলির মধ্যে  এডিশন ১৮৮২ সালে নিউ ওয়র্ক শহরে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করে গ্রাহকদের মাঝে ডিসি পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতেন। 

Thomas Edison



তবে ডিসি পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার সময় কিছু সমস্যা ছিলো। যেমন,

বহুদূর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যেত না, একটি নির্দিষ্ট সীমার বাইরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ভোল্টেজ ড্রপের মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতো এবং এটি ব্যয় সাপেক্ষও ছিলো।

পরবর্তিকালে মহান আবিষ্কারক নিকেলা টেসলার অবধানে বিদ্যুৎ পরিবহন ব্যাবস্তার এক অভাবনীয় পরিবরতন ঘটে ।


তিনি ১৮৮৭ সালে এসি মটর তৈরি করে উন্নত মানের এসি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়। আর এই এসি বিদ্যুৎ নিরধিদায় বহুদূর পর্যন্ত সরবরাহ করা যায়। 

সেইদিন থেকে আজ পর্যন্ত আমরা সেই এসি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছি।

 

Nikola Tesla

সমাপ্ত

বিঃদ্রঃ উপরিক্ত সকল তথ্য ইইই এর বিভিন্ন রেফারেন্স পাঠ্যপুস্তক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। যদি কোনো ভুল থাকে তাহলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

Post a Comment

0 Comments

Close Menu